দেশের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত ব্রডকাস্ট জার্নালিস্টদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার বিজেসি’র চতুর্থ সম্প্রচার সম্মেলন।১৭০৩ জন সদস্যের মধ্যে এবছর রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন ১১৫৬ জন সদস্য। এবছর সম্পূর্ন অনলাইন প্রক্রিয়ায় সদস্যের রেজিস্ট্রেশন হয় এবারের সম্মেলনের তিপাদ্য ছিল “সাংবাদিকতার নীতি-সুরক্ষা-স্বাধীনতা”।০৯ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ৮টায় বাংলা একাডেমিতে শুরু হয় ব্রডকাস্ট সাংবাদিকদের এই আয়োজন। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলনের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর সূচনা বক্তব্য দেন বিজেসির চতুর্থ সম্মেলন কমিটির আহবায়ক মানস ঘোষ। স্বল্প সময়ের আয়োজনে সম্মেলন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখায় সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। উদ্বোধনী পর্ব পরিচালনা করেন সম্মেলন কমিটির সদস্য সচিব রিজভী নেওয়াজ।
সম্মেলনের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় “সাংবাদিকতার নীতি-সুরক্ষা-স্বাধীনতা” শীর্ষক প্যানেল আলোচনা। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি। আলোচক ছিলেন বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক, সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ, ট্রাস্টি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ফাহিম আহমেদ, বিবিসি মিডিয়া এ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনাব মোঃ আল মামুন, জ্যেষ্ঠ ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট জহিরুল আলম, তালাত মামুন, প্রণব সাহা, জাহিদ নেওয়াজ খানসহ সম্প্রচার মাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা। পর্ব দুটি পরিচালনা করেন বিজেসির ট্রাস্টি নূর সাফা জুলহাজ ও মুন্নী সাহা।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, দেশে এখন ৩৫টি টিভি সম্প্রচারে আছে। এই যে সম্প্রচার সাংবাদিকতার এতটা বিস্তৃতি ঘটল, এত সংবাদকর্মীর কর্মপরিবেশ তৈরি হল, এটা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকতা আর মানুষের তথ্যের অধিকারে বিশ্বাস করেন বলেই তিনি এসব করেছেন।
বিজেসির চেয়ারম্যান রেজোয়ানুল হক তার বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা (এথিকস) নিয়ে কাজ করছে বিজেসি। এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালাও প্রনয়ণ করা হয়েছে, সাংবাদিকতার অবক্ষয়ের এই সময়ে যা জরুরি ছিল। নিজেদের জন্য নিজেরাই নীতি তৈরি করার এই চেষ্টাটিকে আমি যুগান্তকারী মনে করি।
সম্মেলনের তৃতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় সাংগঠনিক আলোচনা। এটি পরিচালনা করেন বিজেসির নির্বাহী পর্ষদের সদস্য ইলিয়াস হোসেন। এরপর প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পরিচালনা পর্ষদের সাথে সদস্যরা তাদের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে কথা বলেন। ভবিষ্যতে সদস্যদের কল্যাণে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। চতুর্থ পর্বে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ পর্বে অংশ নেন বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের বিজেসির সদস্যরা। এছাড়াও সম্মেলনে বিজেসির “আফজালুর রহমান স্বাস্থ্যবীমা’র আওতায় ২২ জন সদস্যের হাতে ৮ লাখ টাকার চেক তুলে দেয়া হয় ।বিজেসি সদস্যদের স্ব্যাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে ইবনে সিনা ট্রাস্ট ও ইনসাফ বারাকা হাসপাতালের সাথে স্বাস্থ্যসেবায় বিশেষ ছাড় ও সুবিধার বিষয়ে চুক্তি করা হয়। উক্ত চুক্তির মাধ্যমে বিজেসি আইডি কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে সদস্যগণ যেসকল সুবিধা পাবেন-
ইবনে সিনা ট্রাস্ট
প্যাথলজি টেস্টে ৩৫ %
পিসিআর টেস্ট ৩৫%
রেডিওলোজি ইমেজিং ৩০%
ইমেজিং ৩০% ছাড়
[ইবনে সিনা হাসপাতালের যে কোন শাখায় বিজেসি কার্ড প্রদর্শন করে সুবিধা নেওয়া যাবে]
ইনসাফ বারাকাহ হাসপাতাল
সব ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষায় ৪০%
বেড ভাড়া ও সার্ভিস চার্জে ১০ %
আইসিইউ বেড চার্জে ১০ %
ইমার্জেন্সিতে ১০%
ডেন্টাল ও ফিজিওথেরাপিতে ১০%
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসে ১০%
মেডিসিনে ৬%
[জনাব হিরু, ইনসাফ বারাকা, ফোন নাম্বার - 01926604637]
এছাড়া সম্মেলনস্থলে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্টের সহযোগিতায় সদস্যদের জন্য হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। যেখানে জেনারেল স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি নারী সংবাদ কর্মীদের ব্রেস্ট ক্যান্সার স্ক্রিনিং ও সচেতনতার পরামর্শ দেন একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এছাড়া মানসিক স্বাস্ব্যসেবা দিতে কাউন্সেলিং পরিচালনা করেন একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।
সম্প্রচার মাধ্যমের সংবাদকর্মীদের কল্যাণ, দক্ষতা ও মান উন্নয়নের জন্য ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার- বিজেসি। প্রথমবারই ১১’শর বেশি সংবাদকর্মী বিজেসির সদস্যভুক্ত হন। বর্তমানে বিজেসির সদস্য সংখ্যা ১৭শ’ ছাড়িয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন সময় নানান চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে বিজেসি আজ সংবাদকর্মীদের কাছে একটি নির্ভরতার জায়গা ও বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান। করোনা মহামারীসহ যে কোন দুর্যোগের সময় সদস্যদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেসি। সেবার মানোন্নয়নে সর্বক্ষণ নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দ। এরই ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হল বিজেসির চতুর্থ সম্প্রচার সম্মেলন।